বগুড়ার ধুনট থানায় বাদিনীর মেয়েকে ওসি’র কুপ্রস্তাব!
বগুড়ার ধুনট থানার ওসির বিরুদ্ধে বাদিনীর মেয়েকে অনৈতিক প্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ করেছেন মামলার বাদি পক্ষের লোকজন। এঘটনায় বগুড়ার পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
জানাগেছে, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসিরা হামলা চালিয়ে সোমবার বগুড়ার ধুনট উপজেলার বাসিন্দা গোলাম আকন্দ নামের এক দিনমজুর ও জাহেনা বিবি নামের এক বিধবার ঘরবাড়ি ভাংচুর করে। এঘটনায় ওইদিন রাতে ধুনট থানায় মামলা দিতে গেলে মামলা না নিয়ে মামলার বাদি গোলাম আকন্দের মেয়ে গোলাপি খাতুন (২৪) কে কু-প্রস্তাব দেন থানার ওসি। সে রাজি না হলে এজাহার কপি ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে তার মুখে নিক্ষেপ করা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে বগুড়ার পুলিশ সুপারকে এ সংক্রান্ত অভিযোগ করা হয়।
জানাযায়, সোমবার সকাল ১১টায় ধুনট উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের আনারপুর গ্রামে জমি জমা সংক্রান্ত ঘটনায় প্রতিপক্ষের লোকজন বাদির বসতবাড়ি ভাংচুর করে ডোবায় ফেলে দেয়। এঘটনায় সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে গোলাম আকন্দ বাদী হয়ে ধুনট থানায় একটি মামলা দিতে গেলে ধুনট থানার ওসি মামলা না নিয়ে উল্টো গোলাম আকন্দ গালাগালি করে কক্ষ থেকে বের করে দেন। একপর্যায়ে তার মেয়ে গোলাপীকে তার কক্ষে ডেকে রাতে তার সাথে থাকার প্রস্তাব দেন। এতে গোলাপী খাতুন রাজি না হওয়ায় তাকে গালাগালি করে থানা থেকে বের করে দেয়া হয়। গোলাম হোসেন উপায় না পেয়ে তার মেয়েকে সাথে নিয়ে এঘটনার প্রতিকার চেয়ে মঙ্গলবার বগুড়া পুলিশ সুপার আশরাফ আলী ভূঞার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
গোলাম হোসেন জানান, আনারপুর গ্রামের গোলাম আকন্দের সাথে প্রতিবেশী মৃত. হযরত আলীর ছেলে গোলাপ মাষ্টার ও আজাহার আলীর ছেলে জেল হেসেন ও জুলু হোসেনের জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছিল। এবিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার শালিশী বৈঠক হলেও কোন মিমাংসা হয়নি। এরই জের ধরে সোমবার সকাল ১১টায় প্রতিপক্ষ গোলাপ মাষ্টার ও জেল হোসেনসহ ২০/২৫ জন লাঠিশোডা নিয়ে দিনমজুর গোলাম আকন্দ ও তার বিধবা বোন জাহেনা বিবির তিনটি ঘর ভাংচুর করে ডোবায় ফেলে দেয়।
গোলাম আকন্দের মেয়ে গোলাপী খাতুন জানায়, ঘটনার প্রেক্ষিতে ধুনট থানায় মামলা করতে গেলে ওসি এরফান তাকে বলেন, কত টাকা আনছো? গোলাপী বলে- আমি কোন টাকা আনিনি। তখন আবারো ওসি বলেন, ‘তাহলে রাতে আমার সাথে থাকবি? যদি থাকিস তাহলে মামলাও দেবো আসামীও গ্রেফতার করবো।’ ওই প্রস্তাবে গোলাপী রাজি না হওয়ায় মামলার এজাহার কপি ছিঁড়ে গোলাপীর মুখের উপর ছুড়ে ফেলেন ওসি।
ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খান মো: এরফান তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে সে বিষয়টি তিনি জানেন। তবে, মামলা করার জন্য তার কাছে কেউ আসেনি। রাতে গোলাম হোসেনের মেয়েকে কাছে থাকার প্রস্তাবের বিষয়টিও তিনি অস্বীকার করেছেন।
এবিষয়ে বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা জানান।বাড়ি ভাংচুর সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি,ধুনট থানার ওসিকে মামলা গ্রহনের জন্য বলা হয়েছে,তাই ওসির বিরুদ্ধে করা অনৈতিক অভিযোগটি তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থা করা হবে।