মিনুকে সামাল দেয়াই বড় চ্যালেঞ্জ বুলবুলের রাসিক নির্বাচনে
৩০ জুলাই অনুষ্ঠেয় সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপকভাবে নির্বাচনী হাওয়া বইছে রাজশাহী নগরীতে। ভোটারদের মন জয় করার জন্য প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা। এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন এবং বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। দলীয় ঐক্য এবং বিভিন্ন ধরণের উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় বেশ সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছেন লিটন। অন্যদিকে দলের নেতাকর্মীদের সাথে দ্বন্দ্বের জের ধরে বিপাকে রয়েছেন বুলবুল।
এবারের নির্বাচনে বুলবুলের সামনে বড় বাধা হচ্ছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনু। রাজশাহীতে বিএনপির রাজনীতিতে বুলবুলের উত্থানের পূর্বে মিনুর একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। রাজশাহী বিএনপিতে বুলবুলের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সাথে সাথে স্বাভাবিক ভাবেই মিনুর সাথে বুলবুলের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। ২০১৭ সালে শুরুর দিকে রাজশাহী নগরীতে বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি ঘোষণা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন মিনু ও বুলবুল।
মিনুকে বাদ দিয়ে সাত বছর পর ২০১৭ সালে রাজশাহী নগর বিএনপির গঠিত নতুন কমিটি নিয়ে তাদের দ্বন্দ্ব তখন প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছিল। ওই সময় নতুন কমিটির বিরুদ্ধে মিনু পক্ষের নেতাকর্মী বুলবুল পক্ষের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিল। ওই কমিটি বাতিলের দাবিতে রাজশাহী বিএনপি রক্ষা কমিটি গঠন করেছিল মিনু সমর্থকরা। তখন দলীয় কার্যালয়ে তালা ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কাছে লিখিত নালিশও জানিয়েছিল পদ বঞ্ছিত নেতাদের কয়েকজন। তখন তাদের সেই দ্বন্দ্ব নিরসনে চেষ্টা চালিয়েছিলেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। এরপরও কোন লাভ হয়নি।
সম্প্রতি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে বুলবুল ও মিনুর দ্বন্দ্ব আবারো আলোচনায় এসেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে মিনুর কাছ থেকে রাজশাহী নগর বিএনপির সভাপতির পদটি বুলবুল বাগিয়ে নেয়ার পর থেকেই মূল দ্বন্দ্ব শুরু হয় দুই জনের মধ্যে। তাদের এই দ্বন্দ্বের প্রভাব ইতোমধ্যে বুলবুলের নির্বাচনী প্রচারণায় পড়তে শুরু করেছে। কেন্দ্রের নির্দেশে বুলবুলের সাথে মিনুকে প্রচারণায় দেখা গেলেও পর্দার আড়ালে উল্টো পথে হাঁটছেন মিজানুর রহমান মিনু। জানা যায় মিনুর সমর্থকরা এক প্রকার নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে বুলবুলের নির্বাচনী প্রচারণায়। মিনুর অনেক সমর্থক গোপনে গোপনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী লিটনের পক্ষে কাজ করছেন বলে অভিযোগ করেছেন বুলবুলের একাধিক সমর্থক।
নগরীর একাধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকের সাথে কথা বলে জানা যায় বুলবুল ও মিনুর দ্বন্দ্ব অনেকদিন ধরেই রাজশাহীতে আলোচিত বিষয়। তাদের এই দ্বন্দ্ব নিরসন না হলে নির্বাচনে বুলবুলের ভরাডুবি ঘটতে পারে বলেও মত দিয়েছেন তারা।