লেনদেনে প্রযুক্তির ব্যবহার জানতে আগ্রহ বেশি
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) আয়োজনে দুই দিনব্যাপী পুঁজিবাজার মেলা গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে। এটি সিএসইর পঞ্চম আয়োজন। নগরীর জিইসি মোড়ের একটি কনভেনশন সেন্টারে গতকাল এ মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
মেলার প্রথম দিনে শিক্ষার্থী ও তরুণদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এই শিক্ষার্থী ও তরুণদের আগ্রহ ছিল মুঠোফোনে শেয়ার লেনদেন নিয়ে। মেলায় অংশ নেওয়া একাধিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারাও এ আগ্রহের বিষয়টি প্রথম আলোকে জানিয়েছেন। এ ছাড়া শেয়ার লেনদেনের ক্ষেত্রে কোন ব্রোকারেজ হাউস কী কী সুবিধা দিচ্ছে—এসব বিষয়ে ঘুরে ঘুরে খবর নিয়েছেন আগত ব্যক্তিরা। মেলায় মোট
৯৮টি প্রতিষ্ঠানের স্টল রয়েছে। এর মধ্যে ব্রোকারেজ হাউস ছাড়া তালিকাভুক্ত কোম্পানিও অংশ নিয়েছে।
মেলা ঘুরে দেখা যায়, শেয়ার লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহারকে আগত ব্যক্তিদের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। এমনকি মেলায় অংশ নেওয়া ব্রোকারেজ হাউসের স্টলে বসে অনলাইনে লেনদেনের ব্যবস্থা রাখা হয়। এর বাইরে মেলা উপলক্ষে বিনিয়োগকারীদের বিও (বেনিফিশারি ওনার্স) হিসাব খোলার ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড়ও দিচ্ছে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউস।
মেলা প্রাঙ্গণেই কথা হয় নগরীর বহদ্দারহাট থেকে আসা তরুণ আমজাদুল হকের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেকেন্ডারি শেয়ারবাজার সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার জন্য মেলায় এসেছি। এখানে এক ছাতার নিচে অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাই সহজেই বাজার সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যাচ্ছে।’
মেলায় আসা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এস এম নছরুল কাদির বলেন, এক ছাদের নিচে সব প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে এমন আয়োজন প্রশংসনীয়। এখানে সেমিনার হচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দিচ্ছে। এতে মেলায় আসা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন।
লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের সহকারী ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মিনহাজুল কবির বলেন, ‘দর্শনার্থীদের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী ও তরুণ। তাঁদের আগ্রহ প্রযুক্তি ব্যবহার করে লেনদেন করার বিষয়ে। সেই চাহিদা অনুযায়ী তথ্য উপস্থাপনের পাশাপাশি আমাদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এক ঘণ্টা পরপর পুঁজিবাজার-বিষয়ক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে।’
অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান কবির সিকিউরিটিজের শাখা তত্ত্বাবধায়ক সাইফুদ্দিন বলেন, তাঁদের স্টলে ১০টি বিও হিসাব খুললে আরও তিনটি হিসাব বিনা খরচে খোলা যাবে।
উদ্বোধনী পর্ব: গতকাল সকালে মেলার উদ্বোধন করেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেন। এ সময় তিনি বলেন, অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে সিএসই বর্তমান অবস্থানে এসেছে।
বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী বলেন, বাংলাদেশের শিল্প উদ্যোক্তারা শিল্প গড়ার ক্ষেত্রে পুঁজির জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর বেশি মাত্রায় নির্ভরশীল। কেননা ব্যাংক থেকে সহজে ঋণ পাওয়া যায়। আর বাস্তবতা হচ্ছে, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে অনেকে তা পরিশোধ করেন না। এ কারণে দেশে ঋণখেলাপির সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হলে পুঁজি জোগানের ক্ষেত্র হিসেবে পুঁজিবাজারের ব্যবহার বাড়াতে হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন, সিএসইর চেয়ারম্যান মো. আবদুল মজিদ ও সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়ালি-উল-মারুফ মতিন।